October rising to new allowance : Pay scales notification অক্টোবরেই বাড়ছে নতুন করে ভাতা: পে স্কেলের প্রজ্ঞাপন
সাম্প্রতিক দেশকাল প্রতিবেদক
অষ্টম বেতন কাঠামোর গেজেট চলতি মাসের মধ্যেই প্রজ্ঞাপন আকারে প্রকাশের উদ্যোগ চলছে। অর্থমন্ত্রী দেশের বাইরে থেকে ফেরার পর এর সার সংক্ষেপে অনুমোদন দিয়ে তা আইন মন্ত্রণালে পাঠানো হবে। সেখান থেকে ভেটিং শেষে যাবে রাষ্ট্রপতির কার্যালয়ে। এরপরই হবে প্রজ্ঞাপন। নভেম্বরে পাওয়া যেতে পারে জুলাই-অক্টোবরের বকেয়া মূল বেতন। তবে এরই মধ্যে সরকারি সব কর্মকর্তা-কর্মচারীর বেতন, পদবী ও চাকরিকাল এবং কর্মস্থল সম্পর্কিত তথ্য অনলাইনে সন্নিবেশিত করার নির্দেশনা বাস্তবায়ন করতে কাজ করছে অর্থ বিভাগ। যেখানে বেতন নির্ধারণের একটি অনলাইন ক্যালকুলেটরও থাকবে। অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আব্দুল মুহিত বিদেশে যাওয়া আগে এই নির্দেশনা দিয়ে যান। আগামী ১৭ অক্টোবর তার দেশে ফেরার পর এর একটি খসড়া তাকে দেখানো হবে। অর্থবিভাগের ওয়েবসাইটের সঙ্গে একে যুক্ত করা হবে- যেখানে সরকারি কর্মীরা নিজেদের পরিচিতি দিয়ে নতুন স্কেলে কত বেতন দাঁড়াবে তা জানতে পারবেন। এদিকে সরকারি কর্মকর্তাদের শ্রেণী প্রথা উঠে যাওয়ায় নতুন করে কে কোন গ্রেডে পড়ছেন তা নিয়ে কাজ করছে জন প্রশাসন মন্ত্রণালয়। সূত্রের খবর, নতুন পে স্কেল কার্যকর করতে চলতি অক্টোবর মাসের শেষ সপ্তাহে প্রজ্ঞাপন জারি করা হবে। ফলে আগামী মাসেই নতুন বেতন কাঠামোতে ‘বর্ধিত বেতন’ পাবেন সরকারি চাকরিজীবীরা। বর্ধিত বেতনের সঙ্গে জুলাই থেকে কয়েক মাসের এরিয়ারও পাবেন তারা। সরকারি চাকরিজীবীদের পাশাপাশি এমপিওভুক্ত শিক্ষকরাও নতুন স্কেল অনুযায়ী তাদের বেতন তুলবেন। অর্থ মন্ত্রণালয় সূত্রে এ তথ্য জানা গেছে। তবে আন্দোলনরত পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকদের দাবির বিষয়ে এখনও সিদ্ধান্ত হয়নি। বেতন বৈষম্য নিরসন সংক্রান্ত মন্ত্রিসভা কমিটির দেওয়া সুপারিশের আলোকে এ বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে। সূত্র জানায়, অর্থমন্ত্রী দেশের ফেরার পর মন্ত্রিসভা কমিটির প্রথম বৈঠক অনুষ্ঠিত হবে। এ ব্যাপারে অর্থ মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব মাহবুব আহমেদ বলেছেন, “নতুন পে স্কেলের প্রজ্ঞাপনের খসড়া প্রায় চূড়ান্ত। শিগগিরই তা জারি করা হবে।” নতুন পে স্কেল মন্ত্রিসভায় অনুমোদনের পর সারাদেশের শিক্ষকসহ সরকারি চাকরিজীবীরা অধীর আগ্রহ নিয়ে অপেক্ষা করছেন কবে বর্ধিত বেতন পাবেন তারা। এদিকে, সরকারি চাকরিজীবীদের ‘গ্রেড’ অনুযায়ী পরিচিত হওয়ার লক্ষ্যে নতুন করে নীতিমালা তৈরি করা হবে। জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয় এ বিষয়ে কাজ করছে। অর্থ মন্ত্রণালয় সূত্র বলেছে, নতুন বেতন কাঠামো বাস্তবায়নের লক্ষ্যে যে প্রজ্ঞাপন জারি করা হচ্ছে, তাতে কর্মকর্তাদের গ্রেডিংয়ের বিষয়ে কিছু উল্লেখ থাকবে না। তবে কর্মকর্তাদের গ্রেডিং পরিচিতির বিষয়ে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয় থেকে পৃথক দিকনির্দেশনা দেওয়া হবে। জানা গেছে, গ্রেড অনুযায়ী নতুন বেতন স্কেলের যাবতীয় তথ্য চেয়ে ইতিমধ্যে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয় থেকে অর্থ মন্ত্রণালয়ের সংশ্লিষ্ট বিভাগে চিঠি দেওয়া হয়েছে। চিঠি পাওয়ার পর অর্থ মন্ত্রণালয় থেকে এ-সংক্রান্ত তথ্য পাঠিয়ে দেওয়া হয়েছে। এখন গ্রেড পরিচিতি নিয়ে কাজ করছেন জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তারা। গত বছরের ডিসেম্বরে পে কমিশনের মূল প্রতিবেদন সরকারের কাছে জমা দেওয়ার পর ৭ সেপ্টেম্বর মন্ত্রিসভার বৈঠকে সরকারি চাকরিজীবীদের নতুন পে স্কেল অনুমোদন দেওয়া হয়। নতুন বেতন কাঠামোতে মাসিক ‘মূল বেতন’ সর্বোচ্চ ৭৮ হাজার টাকা এবং সর্বনিম্ন ৮ হাজার ২৫০ টাকা নির্ধারণ করা হয়েছে। তবে এখন শুধু ‘মূল বেতন’ বাড়বে। ভাতা বাড়বে আগামী ২০১৬ সালের জুলাই থেকে। বাড়ছে ভাতা অর্থ মন্ত্রণালয় সূত্র বলেছে, প্রজ্ঞাপনের খসড়া তৈরি প্রায় চূড়ান্ত হয়ে গেছে। এতে ভাতার বিষয়টি চূড়ান্ত করা হয়েছে। জানা গেছে, সরকারি চাকরিজীবীরা এখন মূল বেতনের সঙ্গে চিকিৎসা ভাতা পান ৭০০ টাকা। এই ভাতা বাড়িয়ে ১৫০০ টাকা করা হয়েছে। যাতায়াত ভাতা ১৫০ টাকা থেকে বাড়িয়ে দ্ধিগুণ করা হয়েছে। শিক্ষা ভাতা ৩০০ টাকা থেকে ৫০০ টাকা নির্ধারণ করা হয়েছে। অবসরের বেতন ১২ থেকে ১৮ মাস বর্তমানে কোনো সরকারি চাকরিজীবী পিআরএলে (অবসর-পূর্ব ছুটি) গেলে এক সঙ্গে ১২ মাসের সমপরিমাণ মূল বেতন পান। নতুন স্কেলে ১৮ মাসের সমপরিমাণ ‘মূল বেতন’ পাবেন। খসড়া প্রজ্ঞাপনে এসব বিষয়ে উল্লেখ করা হয়েছে। এ ছাড়া নববর্ষে বৈশাখী ভাতার কথা উল্লেখ থাকছে প্রজ্ঞাপনে। কর্মকর্তা-কর্মচারীদের তথ্য অনলাইনে ডিজিটাল পদ্ধতিতে সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারীদের বেতন-ভাতা নির্ধারণের নির্দেশ দিয়েছেন অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিত। এতে করে প্রজাতন্ত্রের কর্মকর্তা-কর্মচারীদের একটি স্বচ্ছ ও নির্ভুল ডাটাবেইজ তৈরি হবে বলে মনে করেন অর্থমন্ত্রী। এ ছাড়া কে কত বেতন পাবেন সেটা অনলাইনেই দেখা যাবে। এতে নতুন স্কেল অনুযায়ী কার কত বেতন হবে এটার জন্য ক্যালকুলেটর চেপে বের করার প্রয়োজন হবে না। কিংবা কাগজ কলম নিয়েও হিসাব করতে বসতে হবে না। নতুন বেতন স্কেলের গেজেট প্রকাশের পর অর্থবিভাগের ওয়েবসাইটে একটি নতুন পেজ খোলা হবে। যেখানে কর্মকর্তা-কর্মচারীরা নিজেদের পদবি, জাতীয় পরিচয়পত্র নম্বর, চাকরির গ্রেড, কর্মস্থল ইত্যাদি তথ্য প্রদান করলে স্বয়ংক্রিয়ভাবে বেতন নির্ধারিত হবে। পরে এর একটি প্রিন্ট কপি হিসাবরক্ষণ কর্মকর্তারা সংরক্ষণ করবেন। এতে বেতন-ভাতা নির্ধারণ ও হিসাব-নিকাশ প্রক্রিয়া অত্যন্ত সহজ, স্বচ্ছ ও নির্ভুল হবে বলে মনে করে অর্থবিভাগ। এ জন্য সফটওয়্যার তৈরির কাজ চলছে বলে জানা গেছে। জানা গেছে, বর্তমান নিয়ম অনুযায়ী নতুন বেতন স্কেল কার্যকর হলে কর্মকর্তা-কর্মচারীদের বেতন-ভাতা নির্ধারণের জন্য নির্দিষ্ট ফরম পূরণ করে প্রধান হিসাব নিয়ন্ত্রকের কার্যালয়ে পাঠাতে হয়। সেখান থেকে অনুমোদন পেয়ে তা অর্থ বিভাগে ফিরে আসে। এতে অনেক সময় বিভিন্ন ধরনের ভুলভ্রান্তি হয়। তথ্যবিভ্রাট হলে ফরম পূরণ করতে হয়। এতে একদিকে অতিরিক্ত সময়ক্ষেপণ হয়। পাশাপাশি অনেকেই ভোগান্তি ও হয়রানির শিকার হন। আর অনলাইন বা ডিজিটাল পদ্ধতি অনুসরণ করলে এ ধরনের ভোগান্তি বা হয়রানির কোনো সুযোগ থাকবে না